ভূ-পৃষ্ঠের প্রায় ৭০ শতাংশ হচ্ছে পানি আর এই পানির ৯৬ শতাংশ ধারণ করে আছে সাগর এবং মহাসাগর গুলো। দেশ থেকে দেশে, মহাদেশ থেকে মহাদেশে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম সব সময়ই পানি পথ। তাই শুধুমাত্র পণ্য নয় ডেটাও আপনাকে দেশ থেকে দেশে পাঠাতে হবে এই পানির মধ্য দিয়েই। বর্তমান বিশ্বের এই যে আধুনিক টেলিকমিউনিকেশন কিংবা ইন্টারনেট যোগাযোগ ব্যবস্থা এর মূলে রয়েছে সাগর মহাসাগরের তলদেশে হাজার হাজার কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত উচ্চগতি সম্পন্ন সাবমেরিন ক্যাবল । এভারেস্ট এর উচ্চাতাসম গভীরতা পর্যন্ত বিছানো হয়ে থাকে এই ক্যাবল। সমুদের তলদেশ জুড়েই এর সব কারসাজি তাই নাম রাখা হয়েছে সাবমেরিন ক্যাবল। বর্তমানে বাংলাদেশ যুক্ত রয়েছে সি-মি-উই-৪ এবং সি-মি-উই-৫ সাবমেরিন ক্যাবলের সাথে।
সাবমেরিন ক্যাবলে ব্যবহৃত হয় DWDM টেকনোলজী এবং প্রতিটি ক্যাবল সেকেন্ডে কয়েকশত টেরাবাইট পর্যন্ত ডাটা ট্রান্সমিশনে সক্ষম। সি-মি-উই-৫ সাবমেরিন ক্যাবল প্রতি সেকেন্ডে ২৪ টেরাবিট পর্যন্ত ডেটা ট্রান্সমিশনে সক্ষম। আটলান্টিকের তলদেশ দিয়ে আমেরিকা এবং স্পেন কে যুক্তকারী MAREA বর্তমানে বিশ্বের সর্বোচ্চ ট্রান্সমিশন সক্ষমতা সম্পন্ন সাবমেরিন ক্যাবল সিস্টেম যা প্রতি সেকেন্ডে ২০০ টেরাবিট ডাটা ট্রান্সমিট করে থাকে।
প্রতিটি সাবমেরিন ক্যাবলের বিস্তৃতি সমুদ্রের তলদেশে কয়েক হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। সি-মি-উই-৪ সাবমেরিন ক্যাবল আঠারো হাজার কি.মি. এবং সি-মি-উই-৫ সাবমেরিন ক্যাবল বিশ হাজার কিমি পর্যন্ত বিস্তৃত। ফ্রান্স থেকে হংকং পর্যন্ত বিস্তৃত ২৫০০০ কি.মি. দীর্ঘ এই ক্যাবলটি বর্তমানে বিশ্বের সব চাইতে দীর্ঘ সাবমেরিন ক্যাবল।
ডেটার ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলছে এবং ভবিষ্যতে এই ব্যবহার বেড়ে যাবে আরো বহুগুণে । ঠিক এই মুহুর্তে বিশ্বজুড়ে কাজ করছে সর্বমোট ৪২০টি সাবমেরিন ক্যাবল যা প্রায় ১১ লক্ষ কি.মি দীর্ঘ। বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই ডেটার এই দৌড়ে, গুণিতক হারে বেড়েই চলেছে ডেটার ব্যবহার। ২জি, ৩জি, ৪জি ছাপিয়ে সামনে আসছে ৫জির যুগ, খোঁজ চলছে চতুর্থ সাবমেরিন ক্যাবলের।
পৃথিবী ক্রমশ ছোট হতে হতে চলে এসেছে আমাদের হাতের মুঠোয় যার পিছনের কাজ করছে সাবমেরিন ক্যাবলের এই সুবিশাল নেটওয়ার্ক। সাবমেরিন ক্যাবল নিয়ে এমন আরো অনেক অজানা তথ্য জানতে চোখ রাখুন পরের পর্বে।
October 27, 2021 at 5:29 pm
Very good and informative article Sir.
November 13, 2021 at 7:24 pm
thanks…