বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের ওয়েবসাইট হতে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ০৩ কোটি যা ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ কোটিতে। অর্থাৎ গত ৯ বছরে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে নয় কোটি। প্রতি বছর এক কোটির চাইতেও বেশি এই সংখ্যা। আর ক্রমবর্ধমান এই ইন্টারনেট এর চাহিদা মেটাতে অন্যতম গূরুত্বপুর্ণ ভূমিকা পালন করছে যে সাবমেরিন ক্যাবল তা হলো সিমিউই-৫ (SEA-ME-WE-5)।
সিমিউই-৫ (SEA-ME-WE-5) কি?
দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া-মধ্য প্রাচ্য-পশ্চিম ইউরোপ-৫ (South East Asia-Middle East-Wester Europe-5) সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে বিস্তৃত অপ্টিক্যাল ফাইবার সাবমেরিন ক্যাবল যা সিঙ্গাপুর হতে শুরু হয়ে শেষ হয়েছে ফ্রান্সে। ১৭টি দেশ এর ১৯টি ল্যান্ডিং স্টেশনে যুক্ত হয়েছে এই ক্যাবল।
সিমিউই-৫ (SEA-ME-WE-5) এর মাধ্যমে যুক্ত দেশ সমূহ
সিঙ্গাপুর থেকে শুরু করে ফ্রান্স পর্যন্ত বিস্তৃত এই ক্যাবলে যুক্ত হয়েছে ১৭ টি দেশ। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিইয়া, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, ভারত, পাকিস্তান, ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জিবুতি, ইয়েমেন, সৌদি আরব, মিশর, ইতালি এবং ফ্রান্স এই ১৭ টি দেশ যুক্ত হয়েছে এই ক্যাবলে।
সিমিউই-৫ (SEA-ME-WE-5) ক্যাবলের দৈর্ঘ্য
বিশ্বের ১৭টি দেশকে যুক্ত করা এই ক্যাবলের দৈর্ঘ্য ২০,০০০ কিলোমিটার এবং প্রতি সেকেন্ডে ২৪ টেরাবাইট ডাটা ট্রান্সমিশন সক্ষমতা সম্পন্ন এই ক্যাবল। ফ্রান্স হতে শ্রীলংকা পর্যন্ত অংশটুকু স্থাপনের কাজটি করে এলকাটেল লুসেন্ট কোম্পানী এবং শ্রীলংকা থেকে সিঙ্গাপুর অংশটুকু স্থাপন করে নিপ্পন ইলেকট্রনিক্স কোম্পানী।
বিএসসিসিএল এর মাধ্যমে বাংলাদেশ যুক্ত হয়েছে সিমিউই-৫ সাবমেরিন ক্যাবলে
বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানী লিমিটেড (বিএসসিসিএল) দেশের একমাত্র সাবমেরিন ক্যাবল এর মাধ্যমে ব্যান্ডউইথ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। সিমিউই-৫ বাংলাদেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল যাতে বিএসসিসিএল যুক্ত হয় ২০১৭ সালে। পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলায় সিমিউই-৫ সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশনটি স্থাপন করা হয়েছে। উক্ত ল্যান্ডিং স্টেশন হতে এনটিটিএন (ন্যাশন ওয়াইড টেলিকম ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক) সার্ভিস প্রোভাইডারদের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ব্যান্ডউইথ সরবরাহ করছে।
বাংলাদেশ পাচ্ছে ২১০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ
২৪ টেরাবিট ক্ষমতা সম্পন্ন এই ক্যাবল হতে প্রাথমিকভাবে ২০১৭ সালে বাংলাদেশ পেয়েছিল ২০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ যা ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে বেড়ে হয়েছে ২১০০ জিবিপিএস। সম্পূর্ণ ক্যাবলটির প্রাথমিক ডিজাইন ক্যাপাসিটি ছিল ২৪ টেরাবিট তা ২০১৯ সালে ৩৬.৬ টেরাবিটে উন্নীত করা হয়েছে।
এক নজরে সিমিউ-৫ সাবমেরিন ক্যাবলঃ
দৈর্ঘ্যঃ ২০,০০০ কিঃমিঃ
সংযুক্ত দেশঃ ১৭টি
নির্মাণ শুরুঃ জুন, ২০১৪
নির্মাণ সম্পন্নঃ ডিসেম্বর,২০১৬
অপারেশন শুরুঃ ১৬ জানুয়ারী, ২০১৭ সাল
ক্যাবল স্থাপনকারী প্রতিষ্ঠানঃ এলকাটেল লুসেন্ট এবং নিপ্পন ইলেকট্রনিক্স
ডিজাইন ক্যাপাসিটিঃ ৩৬.৬ টেরাবিট
বাংলাদেশের বর্তমানে প্রাপ্ত ক্যাপাসিটিঃ ২১০০ জিবিপিএস
মেয়াদকালঃ ২০ বছর
ক্যাবল এর মালিকঃ সংযুক্ত ১৭ টি দেশের অংশগ্রহণকারী টেলিকম প্রতিষ্ঠানসমুহ
Leave a Reply